আসসালামু আলাইকুম! আমি নিহা । আমি নিয়মিত বুক রিভিউ করছি গুডরিডস্-এ (www.goodreads.com/booquotations) এবং ইনস্টাগ্রামে ।
আজকে ময়ূরপঙ্খির ছবির বই " পিঁপড়া ও ডায়নোসরের গল্প "নিয়ে আলোচনা করছি ।
পিঁপড়াও ডায়নোসরের গল্প
গল্প : মঞ্জু সরকার ছবি : অদ্রিজা ঘোষ
এই গল্পটি লুনা নামের ছোট্ট একটি মেয়ের; যে দাদার কথা মতো চকলেটগুলো মুন, সুমি ও পলা-কে ভাগ করে দেয় নি। বরং লুকিয়ে খেয়ে নিচ্ছিল। এমতাবস্থায় লুনার মুখের চকলেটের কিছু টুকরো মেঝেতে পড়ে গেল। সেই চকলেট খেতে দুটো লাল পিঁপড়া চলে এল। পিঁপড়া দুটো চকলেটের টুকরোগুলো নিতে পারছিল না। তাই একটি আরেকটির কানে কানে সবাইকে খবর দিতে বলল। যাতে তারা সবাই মিলে চকলেটগুলো বাড়িতে নিয়ে মজা করে খেতে পারে। সেই খবর পেতেই পিঁপড়ার দল সারি বেঁধে ছুটে এল। এই কান্ড দেখে লুনা তার দাদুকে ডাক দিল। দাদু দেখে বললেন, পিঁপড়ারা মিলেমিশে থাকে, সবাই মিলে খাবার খায়। আর তাই কেউ ওদের সাথে লড়াই করতে পারে না। লুনা বলে, পিঁপড়ারা অনেক ছোট, টিপে দিলেই তো মরে যাবে। দাদু বললেন, এজন্যই পিঁপড়ারা দল বেঁধে থাকে। একতাই বল- এই উক্তিটি লুনাকে বোঝানোর জন্য দাদু পিঁপড়া ও ডায়নোসরের এক মজার গল্প বললেন। মজার গল্পটা বইটি পড়লে জানতে পারবেন।⠀
⠀
পুরো বইটিতে রঙীন ছবির সাথে সাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সফল হওয়ার শিক্ষা দেয়া হয়েছে। যেখানে ডায়নোসরের মত শক্তিশালী পশুর সাথে ছোট্ট পিঁপড়াদের দল লড়াই করে জিতেছে, সেখানে মানুষের মতো বুদ্ধিমান-শ্রেষ্ঠ জীবের ডায়নোসরের থেকেও বড় প্রাণীদের পরাজিত করা অসম্ভব কিছু নয়। আর তার প্রামাণ্য চিত্র আমাদের স্বাধীন দেশ। এই সুন্দর উদাহরণের মাধ্যমে গল্পটিতে পরিষ্কার ভাবে একতাই বল উক্তিটি বার বার প্রমাণিত হয়েছে। ঐক্যের সাথে এগিয়ে গেলে সাফল্য আসবেই- সেই জ্ঞান এই গল্পটিতে ছড়ানো হয়েছে। ⠀
⠀
দাদু ছোট্ট লুনাকে প্রশ্ন করেছেন, একসাথে থাকার জন্য মানুষকে কি করতে হয়? লুনা বলতে পারল না। দাদু তখন বললেন, একসাথে থাকার জন্য সবাইকে ভালোবাসতে হয়। সবার সাথে ভাগাভাগি করে খেতে হয়।⠀
একতার শিক্ষা আমাদের মানবজাতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভাগ করে নেয়ার মধ্যে ভালোবাসা নিহিত- এর গুরুত্বের পাশাপাশি একতার গুরুত্ব কতখানি তা শিশুদের ছোট থেকেই বোঝানো উচিত।⠀
পছন্দের কোনো খাবার পেলে লুনা সব একাই খায়, কাউকে দেয় না। একদিন ওর দাদু কী এমন গল্প শোনাল কে জানে! তারপর থেকে মেয়েটা অন্যদেরও ভাগ দিতে শুরু করল।
৪-৮ বছর বয়সী শিশুদের জন্য উপযোগী।
৮.৫"×৮.৫" ছবির বই, ২৪ পৃষ্ঠা
মঞ্জু সরকার
কথাশিল্পী মঞ্জু সরকার ছোটগল্প, উপন্যাস ও শিশুসাহিত্য রচনায় কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন। এ পর্যন্ত প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা পঞ্চাশের বেশি। সাহিত্যে সামগ্রিক অবদানের জন্য ১৯৯৮ সালে পেয়েছেন বাংলা একাডেমি পুরস্কার। এছাড়া ফিলিপস, আলাওল ও অগ্রণী ব্যাংক-শিশু একাডেমি শিশুসাহিত্য পুরস্কারসহ আরো অনেক সম্মাননাও রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। তিনি ২০০৬ সালে আইওয়ার ইন্টারন্যাশনাল রাইটিং প্রোগ্রামে অংশ নিয়েছেন। ‘তমস’, ‘মৃত্যুবাণ’ প্রভৃতি তাঁর বিখ্যাত বই। তাঁর রচিত শিশুসাহিত্যের মধ্যে অন্যতম ‘ছোট্ট এক বীরপুরুষ’, ‘রাজাকার পালায়’, ‘ভূত দেখা’, ‘অপুর দাদুগাছ’ প্রভৃতি।
অদ্রিজা ঘোষ
সাহিত্যর ছাত্রী ও আঁকিয়ে অদ্রিজা ঘোষের জন্ম ও বেড়ে ওঠা ভারতের কলকাতায়। চার বছর ধরে তিনি শিশুতোষ বই অলংকরণ করছেন। ময়ূরপঙ্খি ছাড়াও তাঁর অলংকৃত বই প্রকাশিত হয়েছে হারপার কলিনস, প্রথম বুকস এবং কারাডি টেলস থেকে। পাশাপাশি অদ্রিজা মুরাল ডিজাইনও করেন। তিনি বর্তমানে গ্রাফিক ডিজাইনার হিসেবে প্রথম বুকসে কর্মরত আছেন। ময়ূরপঙ্খি থেকে প্রকাশিত তাঁর অলংকৃত উল্লেখযোগ্য বই ‘বাঘ ও পিঁপড়ের গল্প’ ।
Hozzászólások