আমি ভাবনা মুখার্জী, বেঙ্গলি বুকিশ নামে পরিচিত হতেই বেশি স্বচ্ছন্দবোধ করি। পড়াশোনা করছি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আইটিতে । বই এবং সিনেমা বেঁচে থাকার অন্যতম প্রধান অবলম্বন । লিখতে ভালোবাসি । বেঙ্গলি বুকিশ হিসেবে বুকস্টাগ্রামিং ( Bengali.bookish) এবং ব্লগিং করছি কয়েক বছর ধরে । সুন্দর পৃথিবী গড়তে বইয়ের বিকল্প নেই। সেই স্বপ্ন দেখেই কাজ করে যাচ্ছি বই নিয়ে । এখানে আজ আমার পছন্দের ময়ূরপঙ্খির
তিনটি ছবির বই তুলে ধরছি ।
ভূত দেখা গল্প : মঞ্জু সরকার ছবি : ইশরাত জাহান শাইরা
ছোট্ট মেয়ে নিপা। ভূতের ভীষণ ভয়! বাসার কলিংবেলের বাজনা থেকে বাবার মোবাইল ফোনের রিংটোন‒সবখানেই শুধু ভূতের ভয় পায় সে। নিপার ভয় ভাঙাতে বিজু মামা তাকে নিয়ে একদিন গেল চিড়িয়াখানায়। নানান প্রজাতির পশু-পাখি দেখতে দেখতে নিপা ভাবতে লাগল‒ভূতটা কোথায় আছে? এক সময় ঠিকই ভূতের দেখা পেল নিপা। কিন্তু সে কি সত্যি সত্যি বাস্তবের ভূত, নাকি মনের ভয়? জানতে হলে পড়তে হবে ‘ভূত দেখা’ বইটি। ময়ূরপঙ্খির বইগুলোর মধ্যে ভূতের ভয় নিয়ে বেশ কিছু বই আছে। ওদের বইয়ের সবচেয়ে সুন্দর ব্যাপার আমার কাছে এইটিই লাগে যে, ওনারা ছোটদের জন্য শুধু হাসি-ঠাট্টা বা মজার রূপকথার বই-ই প্রকাশ করেন না; বইগুলোয় শিশুদের মনোজগৎ বিকাশের ব্যাপারগুলোও খুব সহজ ভাষায় লেখা থাকে। আর সে জন্যই বাচ্চাদের জন্য খুবই উপযুক্ত এই বইগুলো। কমবয়সি বাচ্চাদের বইপড়ার অভ্যাসের সঙ্গে সঙ্গে নতুন নতুন বিষয় শেখার জন্য ওদের বই অসাধারণ!
ছোট্ট মেয়ে নিপাকে ফোনে কল দেয় এক ভূত। রাতে বাসার কলিংবেল বাজিয়ে ভয়ও দেখায়। নিপার ভয় কাটাতে ওর মামা ভূতটাকে একদিন খাঁচায় বন্দি করে ফেলে। নিপা দেখে খাঁচাটা একদম ফাঁকা!
৪-৮ বছর বয়সী শিশুদের জন্য উপযোগী।
৮"×১১" ছবির বই, ১৬ পৃষ্ঠা
প্রজাপতির গল্প
গল্প : কাজী তাহমিনা ছবি : মানব
প্রজাপতি পছন্দ করে না, এমন মানুষ কম। আর এই গানটা আমরা সবাই ছোটবেলায় গেয়েছি। একইসঙ্গে সব সময় মুগ্ধ হয়েছি প্রজাপতির সৌন্দর্যে! ভালোবেসেছি তার চঞ্চলতা এবং পাখার রঙিন কারুকার্য।
এরিক কার্ল রচিত ‘দ্য ভেরি হাংগ্রি ক্যাটারপিলার’ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে চমৎকার সব ছবি এবং বর্ণনা দিয়ে লেখা হয়েছে ‘প্রজাপতির গল্প’ বইটি। লিখেছেন কাজী তাহমিনা। আর ছবিগুলো মানব-এর আকা। শুয়োপোকা থেকে কীভাবে একটি প্রজাপতির জন্ম হয়‒মূলত এই গল্পটিই বলা হয়েছে বইয়ে খুব মনোগ্রাহী ঢঙে। সেইসঙ্গে ছোটদের শেখার জন্য সাত দিনের নাম এবং সময়ের হিসাব নিয়েও লেখা আছে।
‘প্রজাপতি প্রজাপতি কোথায় পেলে ভাই এমন রঙিন পাখা’
(এরিক কার্ল রচিত ‘দা ভেরি হাংগ্রি ক্যাটারপিলার’ বই থেকে অনুপ্রাণিত)
শুয়োপোকার পেটভর্তি ক্ষুধা আর ক্ষুধা। গপাগপ খেয়েদেয়ে নিজের শক্ত খোলসের ভিতর ওরা চুপটি করে দেয় এক ঘুম। পাক্কা দুই সপ্তাহ পর যখন ঘুম ভাঙে তখন ওরা আর শুয়োপোকা থাকে না।
৪-৮ বছর বয়সী শিশুদের জন্য উপযোগী।
৮"×১১" ছবির বই, ১৬ পৃষ্ঠা
ছবির ভূত
গল্প : বহ্নি বেপারী ছবি : রীশাম শাহাব তীর্থ
ছোট্ট টুকিসোনা স্কুলের হোমওয়ার্ক করছিল একা ঘরে বসে। তা একা বসে থাকলে গা একটু ছমছম তো করবেই। একে তো ঘরে মা নেই, তার ওপর স্কুলে একটা দারুণ ভূতের গল্প না-শুনেই চলে আসতে হলো যে!
আবোলতাবোল ভাবতে ভাবতে কখন যেন টুকি এঁকে ফেলল একটা ভূতের ছবি। ভূত কীভাবে ডাকে, বলো তো? ‘হাও-মাও-খাও, মানুষের গন্ধ পাও!!!’
কিন্তু এই ভূত ডেকে উঠল, ‘টুকিসোনা...’
ভাবছো এ কেমন ভূত? ভূত এত আদর করে ডাকে নাকি?
জানতে হলে পড়ে ফেলতে হবে এই দারুণ মজার বইটা, নাম‒‘ছবির ভূত’।
ছোট বাচ্চাদের মন থেকে ভূতের ভয় দূর করানোর জন্য মজাচ্ছলে দারুণভাবে লেখা হয়েছে বইটি। ঝকঝকে প্রচ্ছদ আর বইজুড়ে মনকাড়া ছবিগুলো ছেলে-বুড়ো যে-কারোরই মন দখল করে নেবে নিমেষে।
চমৎকার এই বইটির গল্প লিখেছেন বহ্নি বেপারী এবং পুরো বইয়ের অলংকরণ করেছেন রীশাম শাহাব তীর্থ। রঙিন এই বইটা হাতে নিলেই মনটা ভালো হয়ে যাবে ।
যে টুকির ভূতের গল্প
শুনে ভয় ভয় লাগত,
তার একদিন নিজের একটা
ভূত হলো, ভূত তাকে শেখাল
‘ইটায় পিটায় কিটায় কায়’ ম্যাজিক।
৪-৮ বছর বয়সী শিশুদের জন্য উপযোগী।
১০"×১০" ছবির বই, ২৪ পৃষ্ঠা